কনটেন্ট কিভাবে চেক করে

আসালামু আলাইকুম । সবাই ভাল আছেন নিশ্চয়ই। আজকে অনেকদিন পরে আপনাদের জন্য  কিছু টাইপিং শুরু করছি। কি নিয়ে লিখবো ভাবছি, হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল আমার কিছু দিন আগের বোকা বনে যাবার একটি কাহিনি। আজকে তাই শেয়ার করছি দেখেন কাজে লাগে কিনা।  

কনটেন্ট কিভাবে চেক করে

আমরা সবাই জানি গুগলে র‍্যাংকিং পাবার জন্য কনটেন্ট হচ্ছে সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট পার্ট। সবাই নিজে নিজের ওয়েবসাইটের জন্য কনটেন্ট লিখে না কিংবা লিখতে পারে না। তারা কনটেন্ট রিসোর্স করে বিভিন্ন সোর্স থেকে সেটা হতে পারে, দেশি-বিদেশি রাইটার, মার্কেটপ্লেস (আপওয়ার্ক, ফ্রীলাঞ্চার, ফাইভার ইত্যাদি), কোন সার্ভিস  এজেন্সি (টেক্সটব্রোকার, হায়ার রাইটার, আইরাইটার ইত্যাদি )।

তো আপনি যেখান থেকে কনটেন্ট নেন না কেন তা অনুমোদন দেবার আগে আপনি কী কী বিষয় দেখে অনুমোদন দিবেন টার কিছু ব্যাপার নিয়ে আজকে লিখবো ।   

#১. প্রথমে আপনি  কনটেন্ট টি ডাউনলোড করে নিন তারপর প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সময় নিয়ে একাধিক বার পড়ুন। যে ওয়ার্ড বুঝতে পারছেন না তার মানে জানুন গুগল করে, তার সিনোনিম (প্রতিশব্দ) গুলি জেনে নিন। সেই জাইগায় একটি কমেন্ট অপশন দিয়ে সিনোনিম গুলোকে যোগ করে দিন। এইভাবে করে পড়ুন,  আশা করছি আপনার মনের আকাশে কনটেন্ট নিয়ে দুর্যোগের ঘনঘটা শুরু হয়ে যাবে যদি কোন উল্টাপাল্টা কিছু করে আপনার কনটেন্ট রাইটার ।

#২. আপনি কনটেন্ট হাতে পেয়ে পড়েছেন একাধিক বার, একটা জিনিষ দেখলেন যে সে  কারণে অকারণে আপনার কীওয়ার্ড কে জোর করে ঢুকিয়ে দিয়েছে, যার ফলে আপনার পাঠক বিরক্ত হবে, দিন শেষে কেউ এটা  পড়ে মজা পাবে না। আপনার  পাঠক কমে যাবে। যার ফলে বাউন্স রেট বেড়ে যাবে। আপনি র‍্যাংকিং সহজে করতে পারবেন না, করলেও কিছু দিন পর আপনাকে টপকে যাবে যার লিখাটি মানসম্পন হবে তাঁর পোস্টটি।  তাই জোর করে কীওয়ার্ড দিয়ে কনটেন্ট অনুমোদন দিলে আপনি বাঁশ খাবেন । কনটেন্ট লিখান পাঠককে টার্গেট করে সার্চ ইঞ্জিনকে টার্গেট করে নয়।

#৩. আপনি যদি দেখেন আপনার লেখক এক বাক্যে এক একটি প্যারা লিখেছে তাহলে সেই কনটেন্ট আপনাকে ভাল ফলাফল এনে দিতে পারবেনা সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিংয়ে । কারণ, কেউ এমন  বাক্য পছন্দ করেনা। করবে কিভাবে বলুন, সে আসলে  লিখার  অন্তর্নিহিত অর্থ অনুধাবন করতে সচেষ্ট হয় না। তাই আপনি আপনার লেখকের কমপ্লেক্স সেনটেন্সের লেখা কনটেন্ট অনুমোদন দেয়া থেকে বিরত থাকুন ।

আর জানতে এই লিংকটি ভ্রমণ করতে পারেন .

#৪. বিশাল বিশাল এক একটি প্যারা লিখেছে তাহলে সেই কনটেন্ট আপনাকে ভাল ফলাফল এনে দিতে পারবেনা সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিংয়ে। কারন এতে আপনার পাঠক বিরক্ত হয়ে যাবে। সে না পড়ে চলে যাবে। সুতারং লেখক কে জানান আপনার জন্য ছোট ছোটো প্যারা করে লিখে দিতে । তবে আগের প্যারার সাথে যাতে পরের প্যারা সম্পর্ক থাকে।

#৫. যদি খালি একটি জিনিশের প্রশংসা করে করে লেখা লেখে তাহলে আপনি তাকে বলুন যে কিছু সত্যি দুর্নাম যেন প্রকাশ করে, না হয় আপনার লিখাটা পাঠকের বিশ্বাসযোগ্য হবে না। যদিও এটি সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিংয়ে কোন প্রভাব ফেলে না কিন্তু আমি এটা দেখে থাকি। ভাবছেন কেন সবাইকে ভাল বললে আপনার পাঠক ভাব্বে আসলে আমি গৎবাঁধা লিখা দিয়ে তাঁর সময় নষ্ট করছি কারণ ক্লাসের ১০ জনের মাঝে ১০ জন সমান থাকে না।

#৬. লিখাতে যদি প্রচুর পরিমাণে বানান ভুল হয়।  তাহলে আপনার এই লেখককে সাবধান করুন। কারণ বানান ভুলের কারণে যেকোন বাক্যের ভুল অর্থ বুঝতে পারে।

#৭. লেখাতে দেখুন সে কি পরিমানে গ্রামার ভুল করেছে। লিখাতে যত গ্রামার ভুল কম সেই লিখা র‍্যাংকিং পাবার সম্ভাবনা বেশি।

#৮.  লিখা প্লেগারিজম মুক্ত কিনা । কিভাবে কি দিয়ে চেক করা যায় ভাবছেন।  ফ্রী টুলস  ব্যবহার করে দেখতে পারেন, ম্যানুয়ালি দেখতে পারেন, গুগল ডাবল কোটেশনের মাঝে একটি বাক্য রেখে সার্চ করে করে, কিংবা পেইড প্লেগারিজম চেকার ইউজ করতে পারবেন।

খুবই শক্তভাবে  এই ৮টি  বিষয়ের উপরে আমি নজর দিয়ে  থাকি ।

কিছু কমন প্রশ্ন কনটেন্ট চেক নিয়ে ও তার উত্তরে আমি
কিছু কমন প্রশ্ন কনটেন্ট চেক নিয়ে ও তার উত্তরে আমি

কিছু কমন প্রশ্ন ও তার উত্তরে আমি

#১. কিভাবে বুঝেন যে এটি স্পিন কনটেন্ট?

যখন আপনি ম্যানুয়ালি লিখাটি পড়বেন আশা করছি আপনি নিজেই ধরতে পারবেন। দেখবেন স্পিন কনটেন্টের মাঝে লিখাতে খুব ভালভাবে পাঠককে এঙ্গেজ করার মতন হয় না। কিছুটা পড়লে বিরক্তি চলে আসে। এছাড়া অর্থটা ঠিক থাকেনা ।

#২. কিভাবে বুঝেন যে এটি রিরাইট কনটেন্ট ?

কনটেন্টের যেই ওয়ার্ড বুঝতে পারছেন না তার মানে জানুন গুগল করে, তার সিনোনিমগুলি ( প্রতিশব্দ) জেনে নিন। সেই জাইগায় আপনার কাছে যেই ওয়ার্ড সহজ মনে হয় তাই দিয়ে অপরিচিত ওয়ার্ড  বাদ  করে দিন। তারপর ম্যানুয়ালি চেক করুন । এই নিয়ম ফলো করে একাধিক বাক্য চেক করুন।  দেখছেন যে গুগল বারবার একটি ওয়েবসাইটকে আপনার সামনে নিয়ে আসছে তাঁর মানে.. না থাক আমি কিছু বললাম না আপনি বুঝে  নেন। ম্যানুয়ালি চেক করতে ১০-১২ ওয়ার্ড বিরাম চিহ্ণ ছাড়া ডাবল কোটেশনের মাঝে রেখে সার্চ করুন।

#৩. কিভাবে গ্রামার চেক করেন?

আমি ম্যানুয়ালি দেখি সেই সাথে সাথে গ্রামারলি প্রিমিয়াম ভার্সন ইউস করি। জিঞ্জার ও প্যারা প্যারা করে দিয়ে দেখে থাকি।

#৪. ভাই ইয়াস্ট প্লাগিন্স দিয়ে কনটেন্ট তো সব সময় ভাল বলে না আপনারা যাকে ভাল বলেন?

ইয়াস্টের লাল নীল বাত্তি দেখে কনটেন্ট ভাল খারাপ যাচাই বাছাই না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ এতে ম্যানুয়ালি কিছু দেয়া নাই জাস্ট সফটওয়্যার বেসিস কিছু ভাল খারাপ দেখে বাত্তি জ্বালায়। এতে আপনার পাঠকের পড়তে কেমন লাগবে তা তার বিবেচনার বিষয় নয়।

রিসোর্স লিংকঃ গেস্ট পোস্টের আদ্যোপান্ত

#৫. লিখা প্লেগারিজম মুক্ত কিনা দেখেন কিভাবে?

ফ্রী টুলস ১০০% সঠিক দেখায় না, এছাড়া যদি ভাল মাপের চোর হয় তাহলে ম্যানুয়ালি ও চেক করে ধরা কঠিন।  আমি আসলে ম্যানুয়ালি এটা চেক করি না। কারণ এটা ম্যানুয়ালি যে ফলাফল দেখায় তা মূল্যহীন আমার কাছে। কপিস্কেপ আমার চেক করার  টুলস। আমি কপিস্কেপ ইউস করতে ভালবাসি, তবে গ্রামারলি ইউস করে থাকি সাথে সাথে ।

#৬. আপনি কোন মার্কেটপ্লেস বা কোনখান থেকে লিখা নেন?

আমি টেক্সটব্রোকার, হায়ার রাইটার, আইরাইটার ও আপওয়ার্ক থেকে নেই। তবে আমার কাছে বেস্ট মনে হয়েছে টেক্সটব্রোকার।  দেশি এমন কাউ কে ইউস করি নাই। আমি কাউ কে সাজেশন দিব না আগেই বলে রাখছি।

#৭. আপনার বাজেট কেমন থাকে?

আমি ১০০০ ওয়ার্ডের জন্য ২০ ডলার বাজেট ধরে থাকি ।

#৮. কিছু উচ্চমার্গীয় কথাবার্তা

আপনি দেখেন যে সে তার কনটেন্টের মাঝে কই কই থেকে  ইনফরমেশন ইনকর্পোরেট করেছে। যদি সে গঁদ বাধা লিখা লিখে তাহলে আপনার এই কনটেন্ট র‍্যাংকিং পাবার জন্য কোন হেল্প করবে না। কিলাই কাঁঠাল পাকালেও তা টেস্টি হয় না।

অনেক ব্যাকলিংক করবেন বাট বাকি টা নাইবা বললাম। তাহলে কি দেখবেন যদি অ্যামাজন প্রোডাক্ট রিভিউ হয় তাহলে কাস্টমারের রিভিউ থেকে ইনফো নিতে বলবেন, ম্যানুফ্যাকচার ওয়েবসাইট থেকে ইনফোরমেশন নিতে বলবেন, এই সম্পর্কিত লোকজনের দেয়া ইউটিউব ভিডিও দেখতে বলবেন, ফোরাম গুলিতে এই প্রোডাক্ট বা বিষয় নিয়ে লোকজনের থ্রেডগুলি দেখতে বলবেন, কুওরা, ইয়াহু আন্সার এই সব প্রশ্ন উত্তর ওয়েবসাইট থেকে ইনফরমেশন ইত্যাদি সোর্স থেকে ইনফরমেশন নিয়ে তাকে কনটেন্ট লিখতে বলবেন।

তারপর আপনি তার লিখার সাথে এই সোর্স কোথা থেকে ইনফো নিয়েছে মিলিয়ে মিলিয়ে দেখবেন।  তাকে বলে দিতে পারেন ইনফো সোর্সগুলিকে আলাদা একটা ফাইলে দিয়ে দিতে।   যদিও ভাল ফলাফল পেতে গেলে আপনাকে ভাল ধরনের লেবার দিতে হবে।

#৯.   ম্যানুয়ালি চেক করার পর আমার ওয়েবসাইট কনটেন্ট দিয়েছি তারপর দেখি এটা কপি কনটেন্ট

কনটেন্ট ম্যানুয়ালি চেক

আসলে  ম্যানুয়ালি চেক করলে সব সময় ১০০% নিরভুল ফলাফল দেয় না। যেমনঃ “it’s really no real shock that there are also many tuna fishing lures” এটি একটি ওয়েবসাইট থেকে নেয়া কনটেন্ট দেখুন গুগল কি বলে? কিন্তু আপনি এই ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখুন এই পোস্ট থেকে আমি লাইন কপি করে নিয়েছি। এখন আপনি সবসময় ফ্রী বা ম্যানুয়ালি চেক করলে ১০০% নিরভুল ফলাফল দেয় না।  তাই পাত্তি ঢালুন ভালভাবে কনটেন্ট চেক করুন কেন টাকা দিয়ে অন্যর কনটেন্ট নিবেন যা বাসি, পচা। এমন কিছু কনটেন্ট আমার ভিএ দিয়েছিল সে কপি ম্যানুয়ালি চেক করে পাবলিশ করে দিয়েছিল বাকি টা ইতিহাস………

#১০. আমার কনটেন্ট সোর্স প্লেসের সবাই পরিচিত তাই এই ব্যাপার নিয়ে ভাবতে হয় না তারা আমার কনটেন্ট ওয়েল অপ্টিমাইজ করে চেক করে দেয়। আমি খালি কনটেন্ট পাবলিশ করি।

তাদের জন্য নিজের কাজ নিজে করুন। না হয় কবে দেখবেন ভাই চেক না করে চেক করছি বলে কনটেন্ট দিয়ে দিবে বুঝতে পারবেন না। আর কনটেন্ট কুয়ালিটি কিছু টা খারাপ হলে সে চেক করে নতুনভাবে লিখাতে যাবেনা। সামনে ভালো লিখবেন রাইটারকে বলে ছেড়ে দিবন। তাই নিজের কাজ নিজে করুন।

 আসলে এই লেখাটি লেখার জন্য অনেকদিন ধরে ভাবছিলাম তারপর কিছু অংশ লিখার পরে ব্যস্ততার কারণে লেখা স্টপ ছিল। আজকে আবার সেম প্রশ্ন আর এক ভাই করেছে। তাঁর উত্তর লিখার সময় আপনাদের কথা ভেবে বাকি অংশ লিখে ফেললাম।

  আজকের মতন লিখার ইতি টানছি তবে যদি আপনার মনে যদি কনটেন্ট কিভাবে চেক করে নিয়ে কোন প্রশ্নের উদয় হয় তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না। ভাল লাগলে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন। আল্লাহ হাফিজ

Get more stuff

Subscribe to our mailing list and get interesting stuff and updates to your email inbox.